গুয়াহাটির পরে কলকাতা। নর্থ ইস্ট ইউনাইটেড এর বিরুদ্ধে পরাজয়ের পর মুম্বাই সিটি এফসির কাছেও পরাজিত হলো ইস্টবেঙ্গল। ক্রমশঃ ফিকে হয়ে আসছে লালহলুদ বাহিনীর আইএসএলের প্লে অফে খেলার সম্ভাবনা। মঙ্গলবার ইস্টবেঙ্গলকে ঘরের মাঠ যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে পরাজিত করে টেবিলে উপরের দিকে উঠে এলো মুম্বাই। ভালেজোর গোলে ১-০ ব্যবধানে জয়ী হয়ে টেবিলে মোহনবাগানকেও টপকে গেলেন তারা।
স্বাভাবিকভাবেই দলের অন্তরে প্রশ্ন উঠছে সুপার কাপে মারাত্মক ফর্মে থাকা দলটি আবার আইএসএল শুরু হতেই এরকম ভেঙে পড়ছে কেন? কোচের আসনে কিন্তু এখনো সেই কার্লোস কুয়াদ্রাতই রয়েছেন। কিন্তু এখানে মূল পার্থক্য গড়ে দিচ্ছে দল নির্বাচন। অনেক খেলোয়াড়ই চোট ও কার্ড সমস্যায় জর্জরিত হয়ে আইএসএলের ম্যাচে অনুপস্থিত ছিলেন। পরের ম্যাচে অনুপস্থিত থাকবেন মহেশ সিংহ নাওরেম। এছাড়াও সুপার কাপে ছয় জন বিদেশী নিয়ে দল সাজিয়েছেন কুয়াদ্রাত। দেশীয় তারকাদের উপর খুব একটা নির্ভরশীল হতে হয়নি কোচকে। হিজাজি, বোরহা ও ক্লেন্টন নির্ভর দল নিয়ে একটি ত্রিকোণা আক্রমন ধেয়ে গেছে বিপক্ষ শিবিরে। এই মুহূর্তে দলে ভারতীয় ফুটবলারের আধিক্য বেশি। ডার্বিতে চোট পেয়ে মাঠে নেই ক্রেসপো। পার্দোও নেই দলে। এমনকি গত ম্যাচের কার্ড সমস্যায় জর্জরিত হয়ে ক্লেন্টনও মাঠে নেই। সেই ক্ষেত্রে অনেকেই পূর্বাভাস করেছিল মুম্বাই সিটি এফসির মতো শক্তিশালী দলের কাছে এহেন ইস্টবেঙ্গলের পরাজয় অবশ্যম্ভাবী। ফুটবল বিশেষজ্ঞরা মনে করছে, শক্তিশালী মুম্বাইকে এক গোলে আটকে রাখাও ইস্টবেঙ্গলের প্রতি যথেষ্ট প্রশংসার দাবী রাখে। শুরু থেকেই আক্রমণে গিয়েছিল মুম্বাই। বাঁ দিক থেকে বিক্রমের একের পর এক ক্রসে ইস্টবেঙ্গলের গোলে ভালেজো মুহুর্মুহু আক্রমণ তৈরি করে। হিজাজিদের যে আক্রমণ ঠেকাতে রীতিমতো নাজেহাল অবস্থা হয়ে যায়। স্বাভাবিকভাবেই বোঝা যায়, সঠিক পজিশনে ঠিকঠাক ফুটবলার না পেলে সুপার কাপ জয়ী কোচেরও কিছু করার থাকে না। যদিও ম্যাচের আগে সাংবাদিক সম্মেলনে কুয়াদ্রাতের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, একদিনের প্রাকটিসে ফেলেছি ওর পক্ষে কি দলের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়া সম্ভব? স্বাভাবিকভাবেই আত্মবিশ্বাসে ভরপুর কোচ বিষয়টি ফুৎকারে উড়িয়ে দেন। তাঁর বিবৃতিতে স্পষ্ট ছিল, ‘দলের এক্ষেত্রে কোন সমস্যাই হবে না। প্রত্যেক ম্যাচের আগে ভিন্ন ভিন্ন স্ট্রাটেজি তৈরি করা হয়।’ কিন্তু দেখে প্রথম থেকেই মনে হল তিনি ম্যাচ ফিট নন। বহু ক্ষেত্রেই কার্যত মুম্বাই ফুটবলাররা তার পা থেকে বল ছিনিয়ে নিল। গোটা ম্যাচেই তিনি গতি মন্থরতায় ভুগছিলেন। দলের ক্ষত মেরামতিতে কার্লোস কী ব্যবস্থা নেন সেটাই এবার দেখার। যদিও ম্যাচ শেষে কোচ বলেছেন প্রথম ছটি দলের মধ্যে শেষ করার বিষয়ে এখনো তিনি আত্মবিশ্বাসী।