বাংলাদেশ ক্রিকেট ইতিহাসের সেরা দুই খেলোয়াড় হলেন সাকিব আল হাসান ও তামিম ইকবাল। জাতীয় দলের হয়ে দীর্ঘ সময় একসাথে দুজনে দেশের জার্সিতে খেলেছেন। উপহার দিয়েছেন বেশ কিছু স্মরণীয় মুহূর্ত। ফ্রাঞ্চাইজি ক্রিকেটের সমীকরণে তারা দুজন এখন একে অপরের প্রতিদ্বন্দ্বী। রংপুর রাইডার্স ও ফরচুন বরিশালের দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ার অনুষ্ঠিত হওয়ার আগে তাই সবচেয়ে বেশি উচ্চারিত নামের তালিকায় রয়েছেন তারাই। দুজনেই দুটি দলের সবচেয়ে বড় তারকা।
গোটা বাংলাদেশ জুড়েই রয়েছে সাকিবের অগণিত ভক্ত। পাশাপাশি তামিমের ভক্তও কিন্তু কম নয়। প্রত্যেক সমর্থকের চোখেই তাদের প্রিয় ক্রিকেটার সবচেয়ে সেরা। আর এই নিয়ম আদি অনন্তকাল ধরে বিভিন্ন দেশে যুগের পর যুগ চলে আসছে। একজন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার, অন্যজন দেশের সেরা ব্যাটসম্যান। তাই অর্জনের দিক থেকে দুজনের পাল্লাটাই বেশ ভারী একথা বলাই যায়। সেক্ষেত্রে ভক্তদের প্রত্যাশাও তাদের কাছে বেশ কিছুটা বাড়তিই থাকে।
প্রতিমুহূর্তে বেড়ে চলা এই প্রত্যাশার জায়গা থেকেই বিগত কয়েক মাসে যে প্রশ্ন বার বার মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে গোটা বাংলাদেশ জুড়ে তাহলো সাকিব ও তামিমের মধ্যে কে সেরা। ক্রিকেটের দিক থেকে চিন্তা করলে এই প্রশ্ন বড়োই যুক্তিহীন। একজন স্পেশালিস্ট ওপেনারের সাথে কখনোই একজন অলরাউন্ডারের তুলনা চলতে পারে না। তবে ভক্তদের সেই সব নিয়ে ভাবনা-চিন্তার কোনও জায়গা নেই। তাই সামাজিক মাধ্যমে অহরহই চলছে তর্কযুদ্ধ। প্রতিনিয়ত বাড়ছে উত্তাপ।
প্রসঙ্গত দেখতে গেলে সাকিব ও তামিমের যা বয়স, তাতে শীর্ষ পর্যায়ে দেশের জার্সিতে আর খুব বেশি সময় তাদের দেখার সম্ভাবনা নেই। সেইজন্যই বিপিএলে ক্রিকেটপ্রেমীদের দিক থেকে উঠছে বার বার একটাই দাবী। সবকিছু ছেড়ে এই মুহূর্তে ক্রিকেটটিকে উপভোগ করার সময়। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে ধারাভাষ্য দিতে আসা পাকিস্তানি ক্রিকেটার আমির সোহেলও এই প্রসঙ্গে এমনটাই মতবাদ পোষণ করছেন। তিনি একটি বিবৃতি দিয়ে বলেন, ‘ দেখুন আমি জানিনা ওদের মধ্যে কেন তুলনা করা হচ্ছে। দুজনেই তো বাংলাদেশ ক্রিকেটের কিংবদন্তি। আমার দুজনের খেলাই খুবই ভালো লাগে। বাংলাদেশের মানুষকে বলবো, ওরা যতদিন খেলছে ওদের খেলাটা শুধু উপভোগ করে যান।’
আমির সোহেলের আহবানে কতটা সারা দেবেন বাংলাদেশের ক্রিকেটপ্রেমীরা, তা সময়ই বলবে। তবে চলতি বিপিএলে তাদের যা ফর্ম, তাতে যথেষ্ট প্রশংসা কুড়িয়েছেন উভয়ই।
১৩ ম্যাচে তিনটি অর্ধশত রানে এখনো পর্যন্ত তামিমের রান ৪৪৩। স্ট্রাইক রেট প্রায় ১২৬। সর্বোচ্চ রান স্কোরার এর তালিকায় বরিশাল অধিনায়ক রয়েছেন দুইয়ে, মাত্র চার রান বেশি করে শীর্ষে রয়েছেন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের তাওহীদ হৃদয়। এই তালিকায় শাকিবের অবস্থান রয়েছে ১২ নম্বরে। বারোটি ম্যাচে তার নামের পাশে রয়েছে ২৫৪ রান। দুটি অর্ধ শতরান করেছেন। ঈর্ষাণীয় স্ট্রাইকরেট ১৬১.৭৮। বল হাতেও তিনি নিয়েছেন ১৭টি উইকেট। সর্বোচ্চ উইকেট শিকারির তালিকায় এই তারকা এই বছরের বিপিএলে দুই নম্বরে অবস্থান করছেন। সে ক্ষেত্রে বুধবারের ফাইনালে যাওয়ার লড়াইয়ে এই দুজনের ফর্মে হয়তো অনেকটা পার্থক্য গড়ে দিতে পারে ম্যাচে। বুধবার সন্ধ্যায় হাইভোল্টেজ ম্যাচের অপেক্ষায় বাংলাদেশের ক্রিকেটপ্রেমীরা।