বাজবল ক্রিকেট নিয়ে ক্রমে রোষ ছড়াচ্ছে ইংল্যান্ডের ক্রিকেট মহলে। ভারতের মাটিতে পরপর দুটো টেস্ট হেরে গভীর চাপে পড়েছে ব্রেন্ডন ম্যাকালামের কোচিং পদ্ধতি। সমালোচনা শুরু হয়েছে ইংল্যান্ডের আধুনিক টেস্ট খেলার নীতি অর্থাৎ বাজবল ক্রিকেটের। আর এই সমালোচনা কোনো ভারতীয় তারকারা করছেন না। করছেন প্রাক্তন ইংল্যান্ড অধিনায়ক নাসের হুসেন, মাইকেল ভনের মতো তারকরা।
রাজকোটে ৪৩৪ রানে ভারতের কাছে টেস্টে পরাজিত হয়েছে ইংল্যান্ড। যা ভারতের প্রেক্ষিতে বৃহত্তম ব্যবধানে টেস্ট যায়। যার পরেই প্রাক্তন ইংল্যান্ড অধিনায়কদের চরম আক্রোশের মুখে পড়েছে বাজবল। ইংল্যান্ডের একটি সংবাদমাধ্যমে প্রাক্তন ইংল্যান্ড অধিনায়ক মাইকেল ভন বলেছেন, ‘বেন স্টোকস ও ব্র্যান্ডন ম্যাকালাম জমানায় এটা কুৎসিততম হার।’ সমালোচনা করেছেন নাসের হুসেনও। তিনি বলেন, ‘ বাজবলের অর্থ শুধুই আক্রমণাত্মক ক্রিকেট নয়। বাজবল চাপ শুষে নেওয়ার খেলাও বটে। ইংল্যান্ডের শেখা উচিত রাজকোট টেস্টের তৃতীয় দিনে ভারতের তরুণ তারকা শুভমান গিল ও যশস্বী জয়সওয়াল কীভাবে খেললো। প্রথম ৩০-৪০ বলে চাপ শুষে নিয়ে আক্রমণের রাস্তায় গিয়েছিল ওরা দুজন। আর এটাই টেস্ট ম্যাচ ব্যাটিং। ভারত ২২৮.৫ ওভারে সর্বমোট ৮৭৫ রান করে।’ তিনি ইংল্যান্ড দলকে কটাক্ষ করে আরো যোগ করে বলেন, ‘বিশ্বাস করুন ভারতের ব্যাটিং দেখতে বসে আমার একবারও ঘুম পায়নি।’
কিন্তু সম্পূর্ণ ভিন্ন আবহাওয়া ইংল্যান্ড শিবিরে। তারা মূলত এইসব কথা কানে তোলার পক্ষপাতীই নন। ইংল্যান্ড কোচ ব্রেন্ডন ম্যাকালাম ও অধিনায়ক বেন স্টোকস মূলত হাবভাবেই বুঝিয়ে দিচ্ছেন, বাকি দুই টেস্টেও আগ্রাসী ঘরানা থেকে তারা কেউই সরছেন না।
ম্যাকালামের তরফে বিবৃতিও এসেছে এই প্রসঙ্গে। তিনি অত্যন্ত আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে বলেছেন, ‘শুনুন আমাদের ড্রেসিংরুমের অবস্থা যথেষ্টই ভালো। ক্রিকেটারদের মধ্যে আত্মবিশ্বাসের কোনও কমতি নেই। তাই বাইরে কে কি বলল তাতে আমল না দিলেও চলবে। আমরা সেই সমস্ত কথাবার্তাকে ড্রেসিংরুমে ঢুকতে দিতে চাই না।’ স্টোকসও পাল্টা দিয়েছেন তাঁর বয়ানে। তিনি বলেন, ‘ ইংল্যান্ড ক্রিকেটে এই মুহূর্তে প্রত্যেকে আন্তর্জাতিক মানের ক্রিকেটার। ওদের স্বাধীনতা দিতে হবে। অবশ্যই আমরা টেস্ট হেরে যথেষ্টই হতাশ। কিন্তু সেটা নিয়ে পড়ে থাকলে চলবে না। সামনের দিকে এগোতে হবে।’
বাজবলের পাশাপাশি সমালোচনার ঝড় উঠেছে জো রুটের খেলা শট নিয়ে। অনেকে আত্মঘাতী আখ্যা দিচ্ছেন তাঁর আউটটিকে। ইংল্যান্ডের বিখ্যাত ক্রিকেট লিখিয়ে শিল্ড বেরি এই প্রসঙ্গ উল্লেখ করে শটটিকে ইংল্যান্ডের টেস্ট ক্রিকেট ইতিহাসের জঘন্যতম শর্ট আখ্যা দিয়েছেন। তবু একটাই স্বস্তির খবর, রাঁচি টেস্ট থেকে বোলিংয়ে ফিরতে পারেন ইংল্যান্ড অধিনায়ক ব্রেন স্টোকস। তিনি বোলিং করলে ইংল্যান্ড, বাড়তি ব্যাটসম্যান বা বোলারকে প্রয়োজন অনুযায়ী খেলাতে পারবে।